সাভার – আশুলিয়া প্রতিনিধি।
সাভারে আশুলিয়ায় একটি বাড়ির মালিকের শিশু ছেলেকে অপহরণের পর হত্যার করে ঘটনার দুই মাস পর চাঞ্চল্যকর মামলার প্রধান পলাতক আসামি আরিফুল ইসলামকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার দিনই আরিফুলের স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেয়া লিজা আক্তার নামে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলেন জানান পুলিশ ।
রোববার ভোরে পাবনা জেলার সুজানগর সদর থানার তারাবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন এই ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, হত্যাকান্ডের শিকার নয় বছরের শিশু রাজা মিয়া আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকার কালাম মাদবরের ছেলে। অপরাধী আরিফুল তাদের বাড়ির ভাড়াটে। গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকে শিশু রাজাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাতে তার বাবা কালামের মোবাইল ফোনে এক ব্যক্তি ফোন করে রাজাকে অপহরণের কথা জানানো হয়। এসময় অপহরণকারীরা ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। বলা হয়, ওই ব্যক্তি রাজধানীর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর থেকে ফোন করেছেন। এর পরপরই কালাম আশুলিয়া থানায় অভিযোগ নিয়ে যান। তখন এলাকার লোকজন তাকে ফোন করে জানান, তার বাড়ির চারতলার ফ্ল্যাটে আরিফুলের বেলকনিতেই বস্তাবন্দী রাজার মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত শিশুর বাবা।’মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন বলেন, ‘ঘটনার দিনই হত্যার অভিযোগে আরিফুলের কথিত স্ত্রীকে আটক করা হয়।
কিন্তু তখন থেকেই পলাতক ছিলেন আরিফুল আরিফ ওই তরুণীকে মিথ্যা স্ত্রী পরিচয় দিয়েই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। এরপর হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যায় সে। গত দুই মাস ধরে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করছিলেন সে। কখনও নারায়নগঞ্জ, কখনও গাজীপুর আবার মাওনা এলাকায় তার লোকেশন দেখাচ্ছিলো। সবশেষ প্রযুক্তির সহায়তায় পাবনার গ্রামের বাড়িতে আরিফুলের অবস্থান সনাক্ত হই। পরে রোববার ভোরে অভিযান চালিতে তাকে গ্রেপ্তার করি।
কি কারণে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এমন প্রশ্নে এসআই আল আমিন বলেন, ‘আসামি আরিফুলের টাকা ও নারীর প্রতি প্রচণ্ড লালসা রয়েছে। এ কারণেই সে বাড়ির মালিকের ছেলে শিশু রাজাকে অপহরণ করে নিজ ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রেখে মুঠোফোনে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেছিলো। তবে আরিফুল পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে।’
নিহত শিশুর বাবার একাধিক স্ত্রী থাকায় হত্যাকান্ডের পারিবারিক কোন সংশ্লিষ্টতা ছিলো কি না সে বিষয়ে এসআই বলেন, ‘হত্যাকান্ডের সাথে আরও কেউ সম্পৃক্ত আছে কি না এ জন্য আসামির রিমান্ড চাওয়া হবে। আজ দুপুরেই তাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে পাঠানো হবে।’